ডিম আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেলের ভাণ্ডার। কিন্তু বাজারে ডিম কিনতে গেলে অনেকেই একটি প্রশ্নে দ্বিধায় পড়েন—সাদা ডিম নেবো না বাদামি ডিম?
শোনা যায়, “বাদামি ডিম বেশি পুষ্টিকর, আর সাদা ডিম কম গুণসম্পন্ন।”
এই ধারণা কতটা সত্য? আসুন, এই সাধারণ ভুল ধারণার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা জানি।
🧪 সাদা আর বাদামি ডিমের পার্থক্য কী?
সাদা বা বাদামি ডিমের রং নির্ভর করে মুরগির জাতের ওপর।
- সাদা পালকের মুরগি সাধারণত সাদা ডিম পাড়ে।
- লালচে বা গাঢ় পালকের মুরগি বাদামি ডিম পাড়ে।
👉 এই রঙের পার্থক্য শুধুই বাহ্যিক, ডিমের পুষ্টিগুণ এতে পরিবর্তিত হয় না।
🍽️ পুষ্টিগুণে কোনো পার্থক্য আছে কি?
না, বিজ্ঞান অনুযায়ী পুষ্টিগুণ প্রায় একই।
সাদা ও বাদামি ডিমে নিম্নলিখিত উপাদানগুলো প্রায় সমান পরিমাণে থাকে:
- প্রোটিন
- কোলিন
- ওমেগা-৩
- ভিটামিন B12, D
- মিনারেলস (ফসফরাস, আয়রন ইত্যাদি)
তবে মুরগির খাবার যদি আলাদা হয়, তাহলে কিছু পার্থক্য হতে পারে। যেমন, যদি বাদামি ডিম দেওয়া মুরগিকে বেশি ওমেগা-৩ দেওয়া হয়, তবে সেই ডিমে ওমেগা-৩ সামান্য বেশি থাকতে পারে – কিন্তু তা ডিমের রঙের কারণে নয়, বরং খাদ্যাভ্যাসের কারণে।
💰 তাহলে দাম বেশি কেন?
বাংলাদেশসহ অনেক দেশে বাদামি ডিম তুলনামূলকভাবে দামি। কারণ:
- বাদামি ডিম দেওয়া মুরগি বেশি খাদ্য খায়
- রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বেশি
- গ্রাহকদের মানসিক ধ্যানধারণা (brown = better)
এই কারণে দাম বাড়ে, কিন্তু এটা গুণগত পার্থক্যের কারণে নয়।
🚫 প্রচলিত ভুল ধারণা দূর করুন
❌ ভুল: বাদামি ডিম বেশি প্রোটিন দেয়
✅ সত্য: উভয় ডিমে প্রায় সমান পরিমাণ প্রোটিন
❌ ভুল: সাদা ডিম ইনজেকশনে বড় করা হয়
✅ সত্য: উভয় ধরনের ডিমই প্রকৃতভাবেই পাড়া হয়
❌ ভুল: বাদামি ডিমই শুধু স্বাস্থ্যকর
✅ সত্য: স্বাস্থ্যকরতা নির্ভর করে ডিম কতটা তাজা ও কীভাবে রান্না করা হয়
✅ কোন ডিম খাবেন?
যেটা আপনার জন্য সহজলভ্য, বাজেটবান্ধব ও তাজা – সেটাই খান।
রঙ নয়, গুণের বিচার হোক বিজ্ঞান দিয়ে।
সাদা হোক বা বাদামি – ডিম একটি সম্পূর্ণ খাবার।
এর রঙ দেখে পুষ্টিমান বিচার করা একটি ভুলধারণা।
জেনে-বুঝে খাবার বাছাই করলেই স্বাস্থ্যকর জীবন নিশ্চিত হয়।